Pages - Menu

Wednesday, September 28, 2016

জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

তুঁত উপকথা 

মৃত্যুর দু'দিন আগে প্রিয় তুঁত গাছকে 
আলিঙ্গন করেছিল 
কাঠুরের প্রেম-পাগলী বউ। 

শোনা কথা, রটা বদনাম -
কাঠুরের চোখে ঘুম ছিল না
আর সবটুকু প্রেম ছিল বউটার চোখে।

তুঁত গাছের পাতা
খেতে শিখলে রেশম কীট, আর ঘুমোয় না
নেশা শান্তির, বিনীদ্র যাপন
লালায় বিষ, নীলকণ্ঠ কীট
তোমার কি সত্যিই ঘুম পায়নি কখনও?
আর নেশারু চোখের স্বপ্ন?
কতটা রেশমী ছিল সবুজ উরুর চরাচর?

বিষ রেশম ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে
উপগ্রহ
গহ্বর মাইল খানেক 
যাযাবর পায়ের ছাপ, গুটি ভেঙে ভেঙে
জল খুঁজে যায় 
মুখের ভেতর খানিক ধূলো,
আর
কীটজন্ম স্মৃতি।
ঘুম নেই, উপগ্রহ তোলপার করেও ঘুম নেই কোত্থাও
হে আদিম বিধাতা 
আর একবার কীটজন্ম দাও!
নীল স্বপ্নে লাফ দিয়ে
এক আঁজলা জল খুঁজে পাই। 

স্বপ্ন আর কীট থেকে বহু আলোকবর্ষ দূরে
স্বপ্নগাছ হও
শেয়ালের মত গর্তের বাইরে মুখ বার করে চাটো
আধখাওয়া তুঁত গাছের পাতা। 

রাত বাড়লে কাপড় ছাড়িয়ে তোমারও
চামড়া পায় রেশমের বিষ
মনে পড়ে কোনও জন্মের কুব্জা ডাকনাম। 

বেদখল জঙ্গলের শেষ তুঁত গাছে 
শেষ কুঠারের কোপ 
পৌঁছতেই পারবে না দূরে ওই পাহাড়ের ছাতে
যেখানে রেশম পুড়িয়ে তাপ নিচ্ছে কীট
নেশারু চোখ, সবটুকু ঘুম পুড়ে গেছে। 

মৃত্যুর দু'দিন আগে - 
বউটার চোখে ঘুম ছিল না। 
সব টুকু প্রেম ছিল কাঠুরের চোখে। 


4 comments:

  1. খুব ভালো শব্দের ব্যবহার

    ReplyDelete
  2. খুব ভালো শব্দের ব্যবহার

    ReplyDelete
  3. ভালো লাগলো, ঐ কীটের ব্যবহার

    ReplyDelete